সকালে খালি পেটে কী খেলে ওজন বাড়ে

আপনি কি দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে চান? হ্যা তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের মতে, সকালে খালি পেটে কিছু ফাইবার, চর্বি, প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ কিছু খাবার খেলে ওজন বৃদ্ধি পাবে। মানসম্মত পুষ্টিকর খাবার’ এবং কিছু স্বাস্থ্যসম্মত ব্যায়াম রয়েছে ওজন বৃদ্ধি করার জন্য। যেগুলো সকালে খালি পেটে করা অত্যন্ত জরুরী।যে সকল খাবার গুলো সকালে খালি পেটে খেলে  ওজন বাড়বে সেগুলো সর্ম্পকে ১০ টি টিপস নিচে দেওয়া হল।

সকালে-খালি- পেটে-কী- খেলে-ওজন- বাড়ে
সকালে খালি পেটে অতিরিক্ত প্রোটিন, ক্যালোরি এবং ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়। তবে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি না করে, ধীরে ধীরে, স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে, ওজন বৃদ্ধি করার উচিত। নিচে ওজন বাড়নোর গুরুত্বপূর্ণ খাবার ও টিপস প্রদান করা হলো।

পেজ সূচিপত্রঃ সকালে খালি পেটে কি খেলে ওজন বাড়ে তার তালিকা

সকালে খালি পেটে কিসমিস খেলে ওজন বাড়ে

ওজন বেশি হওয়া যেমন একটি সমস্যা ঠিক তেমনি ওজন কম হওয়াও একটি বড় মাপের সমস্যা। সকালে খালি পেটে কিসমিস খেলে ধীরে ধীরে ওজন বাড়বে। দ্রুত ওজন বাড়ানোর থেকে একটু সময় নিয়ে ওজন বাড়ানো ভালো। কারণ দ্রুত ওজন বাড়াতে গেলে শরীরে চর্বি জমে যায়। এবং এতে বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়। প্রাকৃতিকভাবে ওজন বাড়াতে কিসমিসের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। ছোট এই ফলটিতে পুষ্টিগুনে ভরা। কিসমিসের মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনির উপাদান যা ওজন বাড়াতে সহায়তা করে।

কিসমিসের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম ফাইবার, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন এর মত কিছু শক্তিশালী উপাদান। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবং শরীরকে করে তোলে শক্তিশালী। শরীরের হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য কিসমিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর ভালো হজম মানেই ভালো মানের খাবার, আর ভালো মানের খাবার মানেই ভালো মানের ওজন। কিসমিস আপনি বিভিন্ন উপায়ে খেয়ে শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে পারেন। সেটা নিচে আলোচনা করা হলো।

সকালে খালি পেটে কিসমিস খাওয়ার বহু গুণ উপকারিতা রয়েছে। যেভাবে কিসমিস খেলে আপনি উপকার পেতে পারেন। প্রথমে কিসমিস পানিতে ধুয়ে নিতে হবে, এবং কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রেখে ওই পানি সহ কিসমিস সকালে খালি পেটে খেলে ওজন বাড়বে। আবার সকালে খালি পেটে ছয় থেকে দশটি ভেজানো কিসমিসের সাথে কলা এবং দুধ ব্লেন্ড করে খেলে ওজন বৃদ্ধি পায়। কিসমিসে মধ্যে গ্লুকোজের মাত্রা বেশি থাকায় দ্রুত ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

উপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, সকালে খালি পেটে কিসমিস যেভাবে খাওয়া হয় না কেন ওজন বৃদ্ধি পাবে। কারণ কিসমিসের মধ্যে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে, সেগুলো মূলত ওজন বৃদ্ধিতে কাজ করে। তাই আপনি যদি আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে চান তাহলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কমপক্ষে ছয় থেকে দশটি কিসমিস খাবেন। এতে করে আপনার শরীরের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। কিসমিস ওজন বৃদ্ধির খাবারের তালিকার মধ্যে সেরা স্থানে আছে।

ওজন বাড়ে সকালে খালি পেটে গুড়ের পানি খেলে

সকালে খালি পেটে গুড়ের পানি খেলে শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। গুড়ের পানিতে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যা হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এবং শরীরের থেকে বর্জ্য পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গুড়ের পানি ত্বকের জন্য খুব উপকারী। সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে গুড়ের পানি খাওয়ার অনেক উপকার হয়েছে। চলুন সেগুলো বিস্তারিত জানি।

পাকস্থলী পরিষ্কার না হওয়া কারণে মানুষের রোগের ঝুঁকে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সকালে যদি গুড়ের পানি খাওয়া হয়, তাহলে পাকস্থলী পরিষ্কারের গুড়ের পানি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। আর পাকস্থলী পরিষ্কার থাকলে শরীর সুস্থ থাকে শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা অনেক অংশে বেড়ে যায়। হজম প্রক্রিয়া বহুবনে বৃদ্ধি পায়। সেই ক্ষেত্রে খাবারের চাহিদা বেড়ে যায় এতে করে আপনার ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা বহুগুণে বেড়ে যাবে। গুড়ের পানি রক্ত পরিষ্কারে কাজ করে। এই জন্য সকালে প্রতিনিয়ত এক কাপ করে প্রাকৃতিক গুড়ের পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। 

শরীরে খাদ্য পরিপাকক্রিয়া যদি সঠিকভাবে হয়, তাহলে শরীরের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। এবং শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। পর্যাপ্ত পরিমাণ গুড়ের পানি সকালে যদি পান করা যায়, সে ক্ষেত্রে আপনার ত্বকও সুন্দর থাকে। শরীরে নতুন রক্ত কোষ তৈরি হয়। শরীর থেকে বিষাক্ত টক্সিন ও নানা ধরনের ক্ষতিকারক উপাদান গুলো দূর করতে গুড়ের পানি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এইজন্য আপনি সকালে নাস্তার আগে কমপক্ষে এক গ্লাস গুড়ের পানি খাওয়ার অভ্যাস করবেন।

সকালে খালি পেটে বানানা শেক খেলে ওজন বাড়ে 

কলা একটি আয়রন সমৃদ্ধ পুষ্টিকর ফল্ যাতে আছে কার্বোহাইড্রেট, ক্যালোরি যা শরীরের দ্রুত ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। এবং শরীরকে করে তোলে সুস্থ সবল এবং শক্তিশালী। সকালে খালি পেটে কমপক্ষে একটি করে পাকা কলা খেলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে। তবে এই কলাকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় সেক তৈরি করে খাওয়া হয়, তাহলে শরীরে আরো দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পাবে। ওজন বৃদ্ধিতে বানানা  সেকের গুরুত্ব অনেক।

বাজারে বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন সমৃদ্ধ পাউডার বা ফাস্টফুড পাউডার পাওয়া যায়। তবে এগুলো স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বলে স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বাসায় তৈরি করা বানানা শেকের পুষ্টি অনেক। বানানা শেখ হল পুষ্টিকর ও সুস্বাদু পানীয়। যা ওজন বাড়ানোর জন্য মানুষ খেয়ে থাকেন। এই পানীয়টি শরীরে তাড়াতাড়ি শক্তি ওজন বাড়াতে কাজ করে। ওজন বাড়ানোর জন্য বানানো শেখ একটি কার্যকারী পানীয়। নিচে বানানো শেখ তৈরির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

বানানা শেখ তৈরিতে লাগে কলা, মধু, চিনি, দুধ, পানি ইত্যাদি। কলায় আছে ভিটামিন বি থ্রি পটাশিয়াম ফাইবার ইত্যাদি। দুধে আছে প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম এবং আরো অনেক উপাদান। কলা, চিনি, দুধ, মধু, পানি এগুলো একসাথে ব্লেন্ড করে বানানা শেখ তৈরি করা হয়। এটা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক ক্লাস করে খেলে ওজন বাড়বে। শরীরে আসবে প্রচুর এনার্জি। শরীরকে করে তুলবে সুস্থ সবল। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই সেটটি তৈরি করার জন্য চিনি ব্যবহার করা যাবে না। এবং সরিষা ফুলের মধু ব্যবহার করতে হবে। 

বাসায় তৈরি বানানা শেকের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, মিনারেল, ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যা শরীরের ক্ষয় পূরণ ও বৃদ্ধি সাধন করে। ওজন বাড়ার পাশাপাশি শরীরের হার এবং মাংসপেশী মজবুত করে। দেহের পুষ্টি ঘাটতি রোধ করে। এই জন্য একটি আদর্শ খাদ্য তালিকার মধ্যে বানানা শেকের গুরুত্বর কোন তুলনা হয় না। এইজন্য আপনার খাদ্য তালিকার মধ্যে প্রতিদিন সকালে কমপক্ষে এক গ্লাস করে বানানো শেখ রাখবেন।

ভিজানো বাদাম সকালে খালি পেটে খেলে ওজন বাড়ে

সকালে খালি পেটে ভিজানো বাদাম খেলে দেহের অনেক উপকার হয়। এটি শরীরকে কর্মঠ রাখে এবং অনেকাংশে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। সকালে যদি আপনি প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করতে পারেন, তাহলে আপনার সারাদিনের ক্লান্তি, বদহজম,ও দুর্বলতা দূর হবে। এইসব সমস্যা দূর করার জন্য সকালে ভেজানো বাদাম খাওয়া একান্ত প্রয়োজন। এটি শরীরের হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয়। হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

সকালে খালি পেটে বাদাম খাওয়া কতটুকু উপকার চলুন জানি। বিভিন্ন পুষ্টিবিদরা বলেন বাদাম ধুয়ে সারারাত ভিজিয়ে রেখে খেলে শরীরের অনেক উপকার হয়। পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিন বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে উচ্চ রক্তচাপের মত রোগ দূর হয়। এছাড়াও আজকাল ডায়াবেটিসের পরিমাণ খুবই বেড়ে গেছে। যদি আপনি সকালে ভেজানো বাদাম এক মুঠো খান, তাহলে আপনার ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যাবে।

ভেজানো বাদাম খেলে ওজন বাড়ে। কারণ ভেজানো বাদামে আছে ফ্যাট, ক্যালোরি এবং উচ্চমাত্রার  প্রোটিন। যা শরীরের ওজন বাড়াতে এবং শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। বাদাম ভিজিয়ে রেখে খেলে তা হজম ভালো হয়। তাছাড়া ভালো মানের পুষ্টি পাওয়া যায়। বিশেষ কিছু বাদাম যেমন চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, আখর প্রতিনিয়ত খেলে শরীরের পেশী গঠনে সাহায্য করে। এছাড়া ভেজানো বাদাম খেলে শরীরের ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয়। ক্ষুধা বাড়িয়ে দিলে খাবারের চাহিদা আসে। এবং শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায় ।ভেজানো বাদাম শরীরের হরমোন ব্যালেন্স রাখতে সাহায্য করে।

ড্রাই ফুডস এবং বীজে  দূরত্ব ওজন বৃদ্ধি করে

সকালে খালি পেটে ড্রাই ফুডস খেলে শরীরের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ড্রাই ফুডসের ভেতরে যেমন খেজুর। সকালে বাসি পেটে যদি আপনি খেজুর খান তাহলে আপনার শরীরের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর হবে তাছাড়া খেজুর হৃদরোগ রক্ত উচ্চচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। খেজুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এইজন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫টি  খেজুর খাওয়া উচিত সুস্থ থাকার জন্য।

খেজুর আল্লাহর দেওয়া একটি প্রাকৃতিক নিয়ামতের ফল। খেজুরে আছে চিনি এবং কার্বোহাইড্রেটের। এটি শরীরে দ্রুত শক্তি যোগায় এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। খেজুরে আছে এন্টি অক্সিডেন্ট এবং খনিজ যা হৃদরোগ হবার হাত থেকে রক্ষা করে। খেজুরে আছে ভিটামিন এবং খনিজ লবণ যা শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ায়। এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে বাঁচায়। খেজুরে আছে  ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম যা হাড় ও মাংসপেশিকে মজবুত রাখতে সাহায্য করে।

হাদিস শরীফে বর্ষিত আছে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন,যে ব্যক্তি সকালবেলা খালি পেটে কমপক্ষে সাত থেকে আটটি আজোয়া খেজুর খাবে, তার সাপে দংশন করলে কিছুই হবে না। তাছাড়া খেজুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয় ত্বকের ভিতরে থাকা মৃত কোষগুলোকে জাগিয়ে তোলে। কিছু স্বাস্থ্যবিজ্ঞানে গবেষণায় দেখা গেছে খেজুর ভিজিয়ে খেলে জিআই কমে যায় ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা মুহূর্তের মধ্যেই বৃদ্ধি পায় না। এর থেকে বোঝা যায় যে ড্রাই ফুডসের মধ্যে খেজুর খুবই একটা গুরুত্বপূর্ণ শুকনা ফল।

নানা ধরনের শুকনা বীজ যেমন কুমড়ার বীজ, ঝিঙার বীজ, লাউয়ের বীজ ইত্যাদি। বীজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেল পাওয়া যায়। যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। সকালে খালি পেটে এই শুকনা বীজ, যদি পানিতে ভিজায়ে খাওয়া হয় তাহলে শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও শরীরকে সুস্থ সবল রাখে। বীজে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা শরীরের মাংস পেশীকে মজবুত করে।সকালে খালি পেটে বীজ খেলে  কোলস্টোর এর মাত্রা কমে।

বিশেষ ধরনের চিয়া ও ফ্ল্যাক্স রক্তে চিনির মাত্রা কমায়। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। বীজ আছে ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার কারনে বীজ খেলে মাথার চুল পড়া কমে।বীজে থাকা ফ্ল্যাক্সসিড নারীদের হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। সকালে খালি পেটে  এক থেকে দেড় চামচ বীজের গুড়া খেলে শরীর সুস্থ থাকবে। শুকনা বীজে থাকা এইসব উপাদান মানব দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনারা যদি  প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ভেজা বীজ অথবা বীজের গুড়ো খান তাহলে আপনাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বহুগুণে বেড়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। 

কাঁচা হলুদ ও কাঁচা রসুনে  ওজন বৃদ্ধি করতে পারে

শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য কাঁচা হলুদ এর গুরুত্ব অপরিসীম। সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেলে পেট এবং রক্ত দুইটাই পরিষ্কার হয়। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের মতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেলে অ্যালঝাইমার্স ,ডিমেন্সিয়া সহ মস্তিষ্কের অনেক সমস্যা দূর হয়। কাঁচা হলুদ ব্রেনকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। এই জন্য স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা প্রতিদিন সকালে কমপক্ষে ১০০ গ্রাম করে কাঁচা হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দেন। আবার কাঁচা হলুদ হজম ক্রিয়া ও কাজ করে। এর জন্য খাবারের রুচি আসে, তার সাথে সাথে আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে। এজন্য বলা হয়েছে কাঁচা হলুদে ওজন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কাঁচা হলুদে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে এর আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে চলুন জেনে নিই। । তাছাড়া কাচা হলুদ র্হাটের জন্য বেশ উপকারী। হার্টকে সচল রাখতে কাঁচা হলুদের তুলনা হয় না। এইজন্য স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা ফলের রসের সাথে কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে খাবার পরামর্শ দেন। কাঁচা হলুদে আর্থারাইটিসের ও বয়স জানিত সমস্যা দূর করে। সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এইজন্য প্রতিদিন সকালে এক টুকরা করে কাঁচা হলুদ খাবেন তাহলে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে এবং আপনার ওজন দ্রুতই বৃদ্ধি পাবে।

সকালে খালি পেটে রসুন খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর হয়। এবং খাবারের চাহিদা বাড়ে। খাবারের চাহিদা বাড়লেই আপনি বেশি খাবেন, বেশি খেলেই শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাভাবিক। তাই প্রতিদিন সকালে যদি আপনি চার থেকে পাঁচটা রসুনের কোয়া খেতে পারেন, তাহলে আপনার পেটের সমস্যা দূর হবে। এবং আপনার খাবারের রুচি অনেক অংশেই বেড়ে যাবে। তার সাথে সাথে আপনার শরীরের ওজন খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে। ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের কার্যকরী উপাদান হিসেবে রসুনকে সুপারফুড এর অধীনস্থ করা হয়েছে।

ডিম এবং দুধে ওজন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে

ডিম এবং দুধে শরীরে ওজন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সুষম খাদ্যের মধ্যে ডিম এবং দুধ অন্যতম। ডিমে আছে প্রোটিন ভিটামিন খনিজ লবণ যা শরীর শরীরকে প্রয়োজনীয় শক্তি যোগায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরল থাকে যেটা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। সেই সাথে সাথে ডিমে ওজন বৃদ্ধি করতে ব্যাপক গেম গেম ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিন সকালে কমপক্ষে একটি করে ডিম খাওয়া উচিত।

ডিমে ভিটামিন এ আছে যা চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ডিমে থাকা ভিটামিন-বি শরীরে শক্তি যোগায়। ডিমের সাদা অংশে থাকে প্রোটিন আর কুসুমে থাকে ফ্যাট, ভিটামিন, এবং আয়রন যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে একজন সুস্থ মানুষ একটি করে ডিম খেলে তার হাড়ের সমস্যা অনেক অংশে কমে যাবে। শিশুর দৈহিক ও শারীরিক বৃদ্ধিতে ডিমের গুরুত্ব অপরিসীম। ওজন বৃদ্ধিতে কার্যকরী একটি খাবার হল ডিম।

দুধে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম,প্রোটিন, ভিটামিন ও চর্বি যা শরীরকে করে তোলে শক্তিশালী। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস করে হালকা গরম দুধ খেলে শরীরের ওজন বাড়বে। দুধ উচ্চ মানের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। যা শরীরের এনার্জিটি বৃদ্ধি করে। এবং শরীরের মাংস পেশিকে শক্তিশালী করে তোলে। এছাড়া দুধ হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে ক্ষুধার পরিমাণ বেড়ে যায়। খাবারের চাহিদা বহু গুণে বৃদ্ধি পায়। এর জন্য শরীরের ওজন বাড়তে থাকে। দুধে থাকা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি শরীরের হাড়কে মজবুত করে। এর জন্য প্রত্যেকের প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস করে দুধ খাওয়া প্রয়োজন।

ওটমিল ও সাদা তিল ওজন বাড়াতে সাহায্য করে

ওটমিল এক ধরনের অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। শরীরের ওজন বাড়ানোর জন্য ওটমিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। ওটমিলে আছে ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং ফাইবার। যা আপনার শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। প্রতিদিন সকালে এক কাপ করে ওটমিল খালি পেটে খেলে আপনার ওজন দ্রুতই বৃদ্ধি পাবে। ওটমিল হজম ক্রিয়াকে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে ওটমিল খেলে হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের  হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। ওটমিল রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। প্রতিনিয়ত ওটমিল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়।

ওজন বাড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ খাবার হিসেবে ওটমিলের চাহিদা ব্যাপক। ওটমিলে থাকা ফাইভার হজমের সহায়তা করে এবং খাবারের চাহিদা বহুগুনে বাড়িয়ে দেয়। ওটমিলে থাকা প্রোটিন মাংসপেশিকে মজবুত করে। এছাড়াও  ওটমিলে আছে ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন এবং আয়রন এগুলো সব শরীরের ওজন  বাডড়িয়ে দেয়। এতে আরো আছে ফাইবার ও পটাশিয়াম যা রক্তচাপের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। যারা ওজন বাড়াতে চান তারা প্রতিদিন সকালে এক কাপ করে ওটমিল খাওয়ার অভ্যাস করে নিন। 
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কাপ পানিতে সাদা তিল ভিজায় খেলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। সাদা তিলে থাকা জিংক সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করে। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যই হচ্ছেন তারা প্রতিদিন এক কাপ পানিতে দুই চামচ করে সাদা তেল সকালে খালি পেটে খাবেন। তাহলে আপনাদের কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর হবে। পেটের সমস্যা দূর হবে যার ফলে আপনাদের খাবারের রুচি বেড়ে যাবে। এবং আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। দ্রুতই আপনি স্বাস্থ্যবান হতে পারবেন।

গোল আলু ও মিষ্টি আলু খেলে শরীরে দূরত্ব ওজন বাড়ে

গোল আলুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ লবণ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। দ্রুত মোটা হওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত সকালে গোল আলু সিদ্ধ করে খেতে হবে। আলুতে আরো বিশেষ ধরনের ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ৬, এবং ফাইবার আছে। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গোল আলুতে অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা ওজন বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

আলু চর্বি মুক্ত এবং পুষ্টিকর খাবার। আলুতে আছে ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম যা দেহের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। দেহের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে দেহকে স্বাস্থ্যবান করতে আলুর কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া  বাংলাদেশে এক জাতীয় লাল মিষ্টি আলু পাওয়া যায়। এই মিষ্টি আলুতেও প্রচুর পরিমাণে  এবং চর্বি মুক্ত কি উপাদান রয়েছে যা শরীরের ওজন বাড়াতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আপনারা যারা ওজন বাড়াতে চান, তারা তাদের খাবারের তালিকায় প্রতিদিন সকালে আলু সিদ্ধ রাখবেন।

লেখকের মন্তব্যঃ

পরিশেষে বলা যায় যে উপরিক্ত খাবার গুলো যদি প্রতিদিন সকালবেলা নিয়ম করে খালি পেটে খাওয়া হয় তাহলে ওজন বাড়বে। লেখকের মতে প্রথম টা খালি পেটে কিসমিস খেলে ওজন বাড়বে। এবং পরবর্তী দুই নাম্বার টা বানানা শেকে ও দ্রুত ওজন বাড়াতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা যারা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে চান তারা এগুলো প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেয়ে দেখতে পারেন, আপনাদের ওজন বৃদ্ধি পাবে ইনশাল্লাহ। সুস্বাস্থ্য মহান আল্লার একটা বড় নিয়ামত। তবে নিজেকে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করতে হবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়ার জন্য।

স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে গেলে আপনাকে নিয়ম করে প্রতিদিন সকালে উপরিক্ত খাবারগুলো খেতে হবে। যদি আপনি শরীরের ওজন বাড়াতে চান। অত্যাধিক ওজন যেমন একটি সমস্যা। ঠিক তেমনি ওজন হ্রাস ও একটি বড় মাপের সমস্যা। এই সমস্যা দূর করতে হলে আপনাকে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে, উপরিক্ত খাবারগুলো খেতে হবে অবশ্যই। জীবনে যদি সুখী হতে চান,তবে আগে সুস্বাস্থ্যে অধিকারী হয়ে যান। আর্টিকেলটা যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে, আপনাদের পরিচিত বন্ধু,ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ার করবেন। ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

তানহা এম জেড নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url